হারকিউলিসকে
বলা হয় মর্ত্যরে সবচেয়ে শক্তিশালী মানুষ। তার ছিল অসাধারণ শক্তি প্রচণ্ড
আত্মবিশ্বাস।
হারকিউলিস বিশ্বাস করতেন তিনি যেই বিশ্বাসটি ধারণ করছেন,
তার বিপক্ষে যেই থাকুক না কেন তিনি কখনও পরাস্ত হবেন না। তার জন্ম
হয়েছিল থিবিসে। জন্মের দীর্ঘদিন পর্যন্ত তার পিতা হিসেবে সেনাপতি
অ্যাম্ফিত্রিয়নকে
ধরা হতো। প্রকৃতপক্ষে তার পিতা ছিলেন দেবতা-রাজ জিউস আর মাতা
আল্কমিনা। সেনাপতি অ্যাম্ফিত্রিয়ন যখন এক যুদ্ধে ব্যস্ত ছিলেন তখন তার
ছদ্মবেশে জিউস আল্কমিনার সঙ্গে মিলিত হন। আল্কমিনার ছিল দুই
সন্তান জিউসের ঔরসে হারকিউলিস আর
অ্যাম্ফত্রিয়নের ঔরসে ইফিক্লিস। দেবতা-রাজের পুত্র হওয়াতেই কিনা কে জানে
শিশু বয়সেই হারকিউলিসের ছিল প্রচণ্ড শক্তি। বরাবরের মতোই জিউস-পত্নী
হেরা ঈর্ষাকাতর হয়ে হারকিউলিসকে হত্যার সিদ্ধান্ত নিলেন।
হারকিউলিস এর প্রথম কাজ-
হারকিউলিস এর প্রথম কাজ-
হারকিউলিস
নিমিয় সিংহ বধ: প্রথম শ্রমটি ছিল নিমিয়ার সিংহ বধ করা। যে সিংহটিকে
কোনো অস্ত্রই আহত করতে পারত না। প্রচণ্ড শক্তিশালী হারকিউলিস শ্বাসরোধ করে
সিংহটিকে বধ করে ঘাড়ে করে মাইসিনিতে নিয়ে গেলে ইউরেন্থিউস তাকে দ্বিতীয়
শ্রমের কথা
জানান।
প্রথম
শ্রমটি ছিল নিমিয়ার সিংহ বধ করা। যে সিংহটিকে কোনো অস্ত্রই আহত করতে পারত
না। প্রচণ্ড শক্তিশালী হারকিউলিস শ্বাসরোধ করে সিংহটিকে বধ করে ঘাড়ে করে
মাইসিনিতে নিয়ে গেলে ইউরেন্থিউস তাকে দ্বিতীয় শ্রমের কথা জানান। - See more
at:
http://www.manobkantha.com/2015/08/20/59257.php#sthash.ru0nEEU5.dpuf
হাইড্রা বধ: দ্বিতীয় শ্রমটি ছিল লার্নায় গিয়ে সেখানকার এক জলাভূমিতে বসবাসরত হাইড্রা নামক এক নয় মাথা বিশিষ্ট প্রাণীকে হত্যা করা। হাইড্রার একটি মাথা ছিল অমর, বাকি আটটি মাথাও ছিল সমান বিপজ্জনক। হারকিউলিস যখন একটি মাথা কাটলেন তখন সেখান থেকে আর দুটি মাথা বের হলো। এ কাজে হারকিউলিসকে সাহায্য করলেন তার ভাগ্নে আয়োলাস। আয়োলাস তাকে একটি জ্বলন্ত লোহার মশাল এনে দিলেন, যা দিয়ে হাইড্রার মাথা কেটে ঘাড় ঝলসে দেয়া হলো, যেন সেখান থেকে আর কোনো মাথা গজাতে না পারে। সব মরণশীল মাথা কাটা হয়ে গেলে হারকিউলিস অমর মাথাটি এক বিশাল পাথরের নিচে চাপা দিয়ে রাখলেন।
হারকিউলিস এর তৃতীয় কাজ-
তৃতীয়
শ্রমটি ছিল সেরেনিয়াসের বনের স্বর্ণের শিং যুক্ত এক পুরুষ হরিণ জীবিত ধরে আনা, যা আর্টেমিসের প্রিয় ছিল।
হরিণটিকে তিনি সহজেই হত্যা করে আনতে পারতেন, কিন্তু জীবিত
ধরে আনা খুবই কষ্টকর ছিল বিধায় তার এক বছর লেগে গেল এই কাজে।
হারকিউলিস এর চতুর্থ কাজ-
এরিমেন্থাসে শূকর বধ: চতুর্থ শ্রমটি ছিল এরিমেন্থাস পর্বতের গুহায় বাস করা এক বন্য শূকর বধ করে আনা। হারকিউলিস শূকরটিকে ধাওয়া করতে লাগলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটা ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। এরপর তিনি শূকরটিকে বধ করে আনলেন।
এরিমেন্থাসে শূকর বধ: চতুর্থ শ্রমটি ছিল এরিমেন্থাস পর্বতের গুহায় বাস করা এক বন্য শূকর বধ করে আনা। হারকিউলিস শূকরটিকে ধাওয়া করতে লাগলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত সেটা ক্লান্ত ও পরিশ্রান্ত হয়ে পড়ে। এরপর তিনি শূকরটিকে বধ করে আনলেন।
হারকিউলিস এর পঞ্চম কাজ-
পঞ্চম শ্রমটি ছিল রাজা অজিয়াসের আস্তাবলগুলোকে একদিনের মধ্যে পরিষ্কার করা। অজিয়াসের ছিল হাজার হাজার গরু, আস্তাবলে সেগুলোর বিষ্ঠা কখনো পরিষ্কার করা হয়নি। হারকিউলিস দুটি নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে সেগুলোর স্রোতের প্রবাহ সেই আস্তাবলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করলেন। মুহূর্তের মধ্যে জঞ্জাল পরিষ্কার হয়ে গেল।
পঞ্চম শ্রমটি ছিল রাজা অজিয়াসের আস্তাবলগুলোকে একদিনের মধ্যে পরিষ্কার করা। অজিয়াসের ছিল হাজার হাজার গরু, আস্তাবলে সেগুলোর বিষ্ঠা কখনো পরিষ্কার করা হয়নি। হারকিউলিস দুটি নদীর গতিপথ পরিবর্তন করে সেগুলোর স্রোতের প্রবাহ সেই আস্তাবলের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত করলেন। মুহূর্তের মধ্যে জঞ্জাল পরিষ্কার হয়ে গেল।
হারকিউলিস এর ষষ্ঠ কাজ-
ষষ্ঠ শ্রমটি ছিল স্টিমফ্যামিয়নের পাখিগুলোকে তাড়িয়ে দেয়া। অসংখ্য পাখি স্টিমফ্যালিয়নবাসীর জন্য বয়ে এনেছিল অসহনীয় দুর্ভোগ। এগুলোকে ঝোপঝাড় থেকে তাড়াতে হারকিউলিসকে সাহায্য করলেন দেবী অ্যাথেনা। পোসেডোনের ষাঁড় ও হারকিউলিস।
ষষ্ঠ শ্রমটি ছিল স্টিমফ্যামিয়নের পাখিগুলোকে তাড়িয়ে দেয়া। অসংখ্য পাখি স্টিমফ্যালিয়নবাসীর জন্য বয়ে এনেছিল অসহনীয় দুর্ভোগ। এগুলোকে ঝোপঝাড় থেকে তাড়াতে হারকিউলিসকে সাহায্য করলেন দেবী অ্যাথেনা। পোসেডোনের ষাঁড় ও হারকিউলিস।
হারকিউলিস এর সপ্তম কাজ-
সপ্তম
শ্রমটি ছিল ক্রীট দ্বীপে গিয়ে মিনোসকে উপহার দেয়া পোসেইডোনের সুন্দর ষাঁড়টি নিয়ে আসা।
হারকিউলিস ষাঁড়টিকে পোষ মানিয়ে নৌকায় করে ইউরেন্থিউসের কাছে নিয়ে এলেন।
হারকিউলিস এর অষ্টম কাজ-
অষ্টম
শ্রমটি ছিল থ্রেসের রাজা ডায়োমিডাসের নরখাদক ঘোড়াগুলোকে নিয়ে আসা। দেবতাদের
অভিশাপে নিহত ডায়োমিডাসের ঘোড়াগুলোকে হারকিউলিস বিনা বাধায় ইউরেন্থিইউসের কাছে
নিয়ে এলেন।
হারকিউলিস এর নবম কাজ-
নবম
শ্রমটি ছিল আমাজনদের রানী হিপ্পোলাইটির কোমরবন্ধনী নিয়ে আসা। হারকিউলিস
হিপ্পোলাইটির কাছে গেলে তিনি জানালেন হারকিউলিসকে তার কোমরবন্ধনী দিয়ে দিবেন।
কিন্তু হেরা এখানে এক অঘটনের জন্ম দিলেন। হেরা আমাজনদের ভাবতে বাধ্য করলেন যে
হারকিউলিস হিপ্পোলাইটিকে অপহরণ করতে এসেছেন। আমাজনেরা তখন হারকিউলিসের জাহাজ
আক্রমণ করে বসলো। হারকিউলিস তখন বিনা কারণেই হিপ্পোলাইটিকে হত্যা করে ফেললেন, এই ভেবে যে তার ওপর আক্রমণের
সব দায়ভার হিপ্পোলাইটিরই। এরপর আমাজনদের পরাজিত করে হিপ্পোলাইটির কোমরবন্ধনী নিয়ে
এলেন।
হারকিউলিস এর দশম কাজ-
দশম
শ্রমটি ছিল পশ্চিমাঞ্চলীয় দ্বীপ ইরাইথিয়াতে বসবাসরত তিন মাথাবিশিষ্ট দানব
গেরাইয়নের গরুগুলোকে নিয়ে আসা। সেখানে যাওয়ার পথে হারকিউলিস ভূমধ্যসাগরে স্থাপন
করলেন দুটি বিশাল পাথরের স্তম্ভ,
যা তখন ‘হারকিউলিসের স্তম্ভ’ নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে যা জিব্রালটার ও কিয়োটা নামে পরিচিত। সেখানে
গিয়ে তিনি গরুগুলোকে খুঁজে পেয়ে ইউরেন্থিউসের কাছে নিয়ে এলেন। অ্যাটলাসের কাঁধ
থেকে ভার নিচ্ছেন হারকিউলিস।
হারকিউলিস এর একাদশ তম কাজ-
একাদশ
শ্রমটি ছিল হেসপেরাইডিসদের কাছ থেকে স্বর্ণ আপেল নিয়ে আসা। হারকিউলিস জানতেন না
এগুলো কোথায় পাওয়া যাবে। হারকিউলিস হেসপেরাইডিসদের পিতা অ্যাটলাসের কাছে গেলেন, যিনি দুই হাতে আকাশ ধরে
রাখছিলেন। তিনি হারকিউলিসকে আপেলের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে জানালেন। হারকিউলিস
প্রস্তাব করলেন যতক্ষণ না পর্যন্ত খুঁজে পান ততক্ষণ হারকিউলিস আকশের ভার বহন করবে।
অ্যাটলাস যখন দেখলেন ভার বহন করার মতো কঠিন কাজ থেকে মুক্তি পাওয়ার একটা পথ আছে
তখন তিনি রাজি হয়ে গেলেন। হারকিউলিসের কাঁধে আকাশ চাপিয়ে দিয়ে তিনি আপেল নিয়ে
এলেন। এসে বললেন, যে তিনি নিজেই ইউরেন্থিউয়াসের কাছে আপেল
পৌঁছে দেবেন। হারকিউলিস অ্যাটলাসের মনের ভাব বুঝতে অ্যাটলাসকে বললেন, কিছু সময়ের জন্য আকাশ ধরে রাখতে যেন হারকিউলিস কাঁধে নরম কাপড়ের
আচ্ছাদন লাগিয়ে নিতে পারে। নির্বোধ অ্যাটলাস রাজি হলে হারকিউলিস আপেল নিয়ে দ্রুত
সরে পড়লেন।
হারকিউলিস এর দ্বাদশ তম কাজ-
দ্বাদশ
শ্রমটি ছিল পাতালে গিয়ে তিন মাথাবিশিষ্ট কুকুর সারবেরাসকে মর্ত্যরে আলোতে নিয়ে
আসা। প্লুটো হারকিউলিসকে এই শর্তে অনুমতি দিলেন যে সারবেরাসের ওপর কোনো অত্যাচার
করা যাবে না। শর্ত মেনে সারবেরাসকে কাঁধে করে হারকিউলিসকে ইউরেন্থিউসের কাছে নিয়ে
এলেন। অবশ্য তাকে ইউরেন্থিউস আবার ফেরত পাঠালেন সারবেরাসকে ফিরিয়ে দিতে। বারোটি
শ্রম পূর্ণ করে হারকিউলিস স্ত্রী-পুত্র হত্যার প্রায়শ্চিত্ত করলেন। ভাবার কোনো
কারণ নেই যে হারকিউলিস এরপর সুখে শান্তিতে জীবনযাপন করলেন। মূলত হারকিউলিসের
বিভিন্ন রোমাঞ্চকর ও কষ্টকর অভিযানের শুরুই হয়েছিল এই বারোটি শ্রমের মাধ্যমে।
ছবি সুত্রঃ ইন্টারনেট
কাহিনি সুত্র- উইকিপিডিয়া (12 Labors of Hercules)
0 comments:
Post a Comment